রকিব কামাল, চবি প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে(চবি)সাংবাদিকের কক্ষ ভাংচুর, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের মোটর সাইকেল চুরি, বিভিন্ন কটেজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নগদ টাকা, ল্যাপটপ, ট্যাব, মোবাইল সহ প্রয়োজনীয় জিনিস উধাও হয়ে যাচ্ছে নিমিশেই।
প্রতিদিনই শোনা যাচ্ছে এ রকম ঘটনা। কোথাও স্ব-শরীরে, কোথাও বা সময় সুযোগ মত হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই সব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।
কোনটি চুরি আর কোনটি লুটপাঠ। গত দেড় মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকা, হল ও পাশ্ববর্তী কটেজের চিত্র এটি।
বিভিন্ন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে কিছুদিন ধরে এমন ঘটনা ঘটছে। হল প্রশাসন এর কাছে অভিযোগ করেও কোন নিরাপত্তা পাওয়া যায়নি। একই ধরনের অভিযোগ করে এ এফ রহমানের হলের আবাসিক শিক্ষার্থী এচম এম মাসুম বলেন, হল প্রশাসন এর নিরাপত্তা খুবই নাজুক।নিরাপত্তা আরো ভাল হলে আমার রুমটিতে চুরি হতো না।
জানা গেছে,বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে প্রায় শতাধিক কটেজ রয়েছে। আবাসিক হলের চেয়ে কম সুযোগ সুবিধা,নিরাপত্তাহীনতা আর সংশয় নিয়ে প্রায় হাজার ও শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের প্রশাসন নিরাপত্তা দিলেও কটেজের শিক্ষার্থীরা এ দিক থেকে বজ্ঞিত। এ সুযোগে প্রায় সময় চুরি হচ্ছে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। এদিকে চুরির সাথে যেন নতুন করে লুটপাট এর ভয়ে সঙ্কিত সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কখন চুরি আর কখন লুটপাট এর হিসাব নিয়ে মিলাতে খুজে ফিরছে তারা।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন,ব্যাক্তি মালিকাধীন কটেজ এ আমরা কম সুযোগ সুবিধা নিয়ে আমরা বসবাস করছি। প্রতিনিয়ত নিরাপত্তা আর শঙ্কায় আমাদের শিক্ষাকার্যক্রম চালাতে হচ্ছে।
এদিকে ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিনের আধিপত্যা হারিয়ে বসা শিবির গোপনে কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে বিভিন্ন কটেজে ছাত্রলীগের তল্লাশির নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নাজেহাল ও লুটপাট করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপ্রতি মো: আলমগীর টিপু বলেন, ছাত্রলীগের কোন নেতাকর্মীকে হল অথবা কটেজে তল্লাশি বিষয়ে কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। কেউ যদি নাজেহাল এর স্বীকার হয় তাহলে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ দিতে পারে, আর কেউ যদি নাজেহাল এর স্বীকার হয়েছেন এমন যথেষ্ট প্রমান নিয়ে আমার সাথে দেখা করে তাহলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তল্লাশির বিষয় অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এচম এম ফজলে রাব্বি সুজন বলেন, এমন কোন কর্মকান্ড এর সাথে চবি ছাত্রলীগ জড়িত নয়। এমন কোন অভিযোগ আসলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওযা হবে। এসব কর্মকান্ডের সাথে জড়িতরা ছাত্রলীগের কেউ নন।
এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয় নিয়ে উপচার্য প্রফেসার ড.ইফতেখার উদ্দীন চৌধুরীর মনোযোগ আকর্ষন করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়গুলো অনাকাঙ্কিত, অনুপ্রভেবিত। আমরা যথেষ্ট সজাগ রয়েছি। পুরো ক্যাম্পাসে ৪৫ জন আনসার রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এছাড়া পুরো ক্যাম্পাস ক্লোজ সাকিট এর আয়তায় আনা হবে এবং এ সক্রান্ত তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যাতে নিরাপত্তার সমস্যার সমাধান ঘটবে।
মাস শেষে নগদ টাকা,ল্যাপটপ সহ প্রয়োজনীয় জিনিস হারিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে আজ একটাই প্রশ্ন খুজে ফিরছে এটি লুটপাট না চুরি।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফ